মোঃসিরাজুল হক রাজু,
ঢাকা-দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে চলাচল করা লঞ্চগুলোতে গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। ঢাকা থেকে ভোলায় আসা ৭৫০ জন ধারণক্ষমতার একটি লঞ্চে ২৫০০ যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে।বরিশাল : পারাবত-১৮ পারাবত-১১, সুরভী-৯, সুন্দরবন-১০, অ্যাডভেঞ্চার-১ ও মানামি লঞ্চ বরিশাল ঘাট থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।যাত্রীদের কারো মুখে মাক্স পরা দেখা যায়নি। জীবাণুনাশকও চোখে পড়েনি।সুরভী-৯ লঞ্চের যাত্রী আহমদ উল্লাহ বলেন, ‘লোকজন একে অন্যের গা ঘেঁষে ডেকে বসে আছে। দূরে বসার জন্য অনুরোধ করলে উল্টো আমাকে হেনস্তা করেছে। ’কথা হয় পারাবত-১৮ লঞ্চের ডেকে বানারীপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়া যাত্রী হাফছা বেগমের সঙ্গে। পরিবারের চারজনকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন তিনি। কারো মুখে মাস্ক নেই। গা ঘেঁষে বসে গল্প করছিলেন। করোনার টিকা নিয়েছেন কি? জানতে চাইলে বলেন, ‘না। ’সরকারের নির্দেশনা ছিল, অর্ধেক যাত্রী নিতে হবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। চালক ও সহকারীদের কভিড-১৯ টিকা সনদ থাকতে হবে। বাস্তবে এর কোনোটি মানতে দেখা যায়নি।
সুন্দরবন নেভিগেশন পরিচালক ও লঞ্চ মালিক সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘লঞ্চের সব কর্মীকে আগামী রবি ও সোমবার টিকা দেওয়া হবে। ’বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক ও বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা সবাই লঞ্চের চালক-মালিকদের স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য বলেছি। ’ভোলা : অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বেশি যাত্রী নিয়ে ভোলার লঞ্চগুলো চলছে। ঘাটে প্রশাসনের নজরদারি দেখা যায়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কর্ণফুলী-১৪ লঞ্চটি প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার যাত্রী নিয়ে ইলিশা ঘাটে এসেছে। যদিও লঞ্চটির ধারণক্ষমতা ৭৫০ জন। যাত্রীরা হুড়াহুড়ি করে লঞ্চ থেকে নামছে। বেশির ভাগ যাত্রীর মুখে মাস্ক ছিল না। আবার বিকেল ৩টার দিকে লঞ্চটি অতিরিক্ত যাত্রী নিয়েই ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। লঞ্চের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীরা মাস্ক না পরে গাদাগাদি করেই সিটে বসে আছে।কর্ণফুলী লঞ্চের ইলিশা ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. তারেক বলেন, ইলিশা-ঢাকা রুটের গ্রিন লাইন-২ ও ক্রিস্টাল ক্রুজ বন্ধ থাকায় কিছুটা ব্যত্যয় হচ্ছে।
বিআইডাব্লিউটিএ ভোলা বন্দরের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্দেশনা পাইনি। ’পটুয়াখালী : ঢাকাগামী ডাবল ডেকার লঞ্চগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। তৃতীয় শ্রেণির যাত্রীদের লঞ্চে আসন নেওয়া কিংবা যাত্রী ওঠানামায় স্বাস্থ্যবিধি কেউ মানছে না। এ ছাড়া এসংক্রান্ত কোনো প্রচারও দেখা যায়নি লঞ্চ কিংবা বিআইডাব্লিউটিএর। গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে এমন চিত্রই দেখা গেছে পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে।
গতকাল পটুয়াখালী ঘাটে ঢাকা অভিমুখে যাত্রার জন্য অপেক্ষমাণ তিনটি ডাবল ডেকার লঞ্চ এমডি এআর খান, এমভি আসা-যাওয়া এবং সুন্দরবন-৯ লঞ্চে যাত্রীদের উঠতে দেখা গেছে গা ঘেঁষে
এ ছাড়া তৃতীয় শ্রেণির আসনে গাদাগাদি করে অবস্থান নিয়ে আছে যাত্রীরা। এমনকি লঞ্চঘাটে ঢুকতে গা ঘেঁষানো ভিড় দেখা গেছে। এদের বেশির ভাগ যাত্রীরই মুখে নেই মাস্ক। এই লঞ্চের তত্ত্বাবধায়ক মো. নাজমুল বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় লঞ্চের যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হয়।
পটুয়াখালী নদীবন্দর কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘যার যার স্বাস্থ্যবিধি তার তার কাছে। ’বরগুনা : নৌবন্দর এলাকায় গতকাল গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় দুটি লঞ্চ। এগুলোতে কোথাও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়নি। টার্মিনাল ও লঞ্চের ডেকে অবস্থান নেওয়া বেশির ভাগ যাত্রীর মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। যাত্রীরা একে অন্যের গা ঘেঁষে বসে ছিল। পূবালী-১ লঞ্চের ঘাট ব্যবস্থাপক এনায়েত হোসেন বলেন, ‘আমরা যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে উঠতে অনুরোধ করেও মানাতে পারছি না। ’বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জালাল উদ্দীন বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মানতে আমরা জনসাধারণকে সচেতন করছি
0 coment rios: