দাম্পত্য কলহের জেরধরে বুধবার দিবাগত রাতে শিশু পুত্রর সামনে বসেই হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে স্ত্রীকে হত্যার পর মহাসড়কের পাশে লাশ ফেলে পালিয়েছে পাষন্ড স্বামী। এসময় নিহতের ১০ মাস বয়সের শিশু পুত্রকে অন্যত্র ফেলে রেখে যায় ঘাতক তামিম শেখ।ঘটনার তিন ঘন্টার মধ্যে ঘাতক স্বামী তামিম শেখকে গ্রেফতার করেছে জেলার আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত তামিম পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে থানার ওসি মোঃ গোলাম ছরোয়ার বলেন, গোপালগঞ্জের বেদগ্রাম থেকে তামিম শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত রাশিদার ভাই রুহুল আমিন শাহ বাদী হয়ে তামিম শেখকে প্রধান আসামী করে আগৈলঝাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ। ওসি আরও জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে উপজেলার বাইপাস মহাসড়কের পাশে একটি ঘেরের পাড় থেকে রাশিদা বেগমের (৩৫) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত রাশিদা আগৈলঝাড়ার নগরবাড়ি গ্রামের মৃত করিম শাহের মেয়ে। একইসময় কান্নার আওয়াজ পেয়ে নিহত রাশিদার দশ মাস বয়সের শিশুপুত্র তানিমকে মায়ের লাশের পাঁচশ’ গজ দূরত্বের সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।লাশ উদ্ধারের পরপরই অভিযান চালিয়ে তিন ঘন্টার মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলার বেদগ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার শেখের ছেলে ঘাতক স্বামী তামিম শেখকে রক্তমাখা জুতা ও জামাপড়া অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়। ঘাতক তামিম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যবসা করতো বলে পুলিশকে জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘাতক তামিম পুলিশের কাছে অকপটে স্ত্রী রশিদা হত্যার প্রাথমিক দায় স্বীকার করেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘাতক তামিমকে নিয়ে পুলিশ হত্যার ঘটনাস্থল বেদগ্রাম পরিদর্শন ও হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের জন্য অভিযানে নেমেছেন।
ঘাতক তামিমের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, দাম্পত্য কলহের জেরধরে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে। নিহত রাশিদার এটা দ্বিতীয় বিয়ে এবং ঘাতক স্বামী তামিমেরও দ্বিতীয় বিয়ে। দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তামিমের আগের স্ত্রীর দুটি ছেলে রয়েছে। বর্তমানে রাশিদার ঘরে ১০ মাস বয়সের তানিম নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। রাশিদাকে তার স্বামী তামিম আগৈলঝাড়া উপজেলার ১নং ব্রীজ সংলগ্ন এলকার একটি ভাড়া বাসায় রাখেন।ঘটনার দিন বুধবার নিহত রাশিদাকে নিয়ে গোপালগঞ্জের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে ঘাতক তামিম। ওইদিন দিবাগত রাত আটটার পরে সেখান থেকে বের হয়ে অপর লোকজনের সহায়তায় রাশিদাকে হত্যা করে ওই রাতে একটি মাহেন্দ্র ভাড়া করে আগৈলঝাড়ার উল্লেখিতস্থানে রাশিদার লাশ ও তার শিশু সন্তানকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ঘাতকরা।
0 coment rios: