মোঃসিরাজুল হক রাজু
স্টাফ রিপোর্টার।
শুনেছি বঙ্গবন্ধুকন্যা অনেক মানুষকে ঘর দিয়েছেন। আমিও একটি ঘর চাই, ঘরটি পেলে আমার দুঃখ ঘুচতো, প্রতিবন্ধী মেয়েটি ও নাতী নাতনীদের নিয়ে মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই হতো, আর ঝর বৃষ্টিতে কষ্ট করতে হতো না’।একটি ঘর চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এভাবেই আকুতি জানান ভাণ্ডারিয়া উপজেলার দক্ষিণ ভিটাবাড়ীয়া গ্রামের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আসমা বেগমের বাবা শাহ আলম তালুকদার (৭৩)। অসহায় শাহ আলম তালুকদার শনিবার সকালে জানান, আমার ৫ মেয়ে। কোন ছেলে নেই। শত দারিদ্রের মধ্যেও তাদের বিয়ে দিয়েছেন তিনি।এখন আমি ৭৩ বছরের একজন বৃদ্ধ। দীর্ঘদিন ডাইবেটিক্সে রোগে ভুগছি এবং কয়েক বার স্ট্রক করে এখন বিছানায় পড়ে আছি। দু একপা হাটতে পাড়লেও আয় করার সমর্থ নেই তার। তিনি আরো জানান, আমার মেঝ মেয়ে আসমা শিশু অবস্থা থেকে জ্ঞান বুদ্ধিহীন সহ নানান সমস্যায় বেড়ে উঠে। তার চরম মানসিক সমস্যার কারনে পড়াশোনাও করানো হয়নি। নিজের দারিদ্রতা ও প্রতিবন্ধী মেয়েকে এক বাক প্রতিবন্ধী ছেলের সাথে বিবাহ দিয়েছি ।
তার সামন্য আয়ে চলছে কোন মতে আমাদের কষ্টের সংসার। কিন্তু আমাদের থাকার মত একটি ঘর নেই। যে কাঠের ঘরে আছি তা খুবই জরাজীর্ণ । সেই জরাজীর্ণ ঘরের দুই কক্ষের একটি ঘরে থাকেন প্রতিবন্ধী মেয়ে ও তার দুই শিশু সন্তান। ঘরের একটি কক্ষে থাকি আমি (বাবা)। পাশে একটি খরকুঠোর ঘরে চলে রান্না-বান্নার কাজ। শাহ আলম তালুকদারের বড় মেয়ে শাহিনুর বলেন, আমার মা গত এক বছর আগে মারা গেছে। বাবা খুব অসুস্থ্য মানুষ।
তার কোন আয় নেই। এই বৃদ্ধ বয়সে প্রতিবন্ধী মেয়ে ও তার সন্তানদের নিয়ে মহাবিপদে আছে। ভাল ভাবে দু-বেলা খাবার জুটছে না আমাদের। গত ১০ বছর ধরে আমি দর্জির কাজ করে এই সংসার চালিয়েছি। এখন আমার বিয়ে হয়েছে তাই আগের মত তাদের সহযোগিতা করতে পারছি না। গ্রামের লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুব কষ্টে আছে বৃদ্ধ শাহ আলম তালুকদার। সে মেয়েদের সহযোগিতায় বেছে আছে। কারো কাছে কখনো সাহায্য চাইতে দেখিনি।তিনি একটি পুরোনো টিনের জরাজীর্ণ ঘরে থাকেন। সেই ঘরের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে ফুটো, সেই ফুটো দিয়ে ডুকছে বাতাস, এই শীতে সীমাহীন কষ্টে কাটছে তাদের মানবেতর জীবন। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আসমা কেঁদে বলেন, আমি কোন ভাতা পাইনা। এখন একটা ঘরই তার স্বপ্ন। বাবার ৯ শতক বসত ভিটার জমিতে যদি কেউ একটা ঘর করে দিতো তাহলেই আমাদের স্বপ্নপূরণ হতো। আর সেই ঘরের নিচে খেয়ে না খেয়ে বাকীটা জীবন কাটাতাম।এ ব্যপারে উপজেলার ১ নং ভিটাবাড়ীয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এনামুল করিম পান্না বলেন, যারা ঘরের জন্য আবেদন করেছেন পর্যায়ক্রমে তারা সবাই ঘর পাবেন। তাদেরও ঘর পাওয়ার জন্য আবেদন করতে বলেন। তাদের ঘর পাইয়ে দেয়ার ব্যাপারে আমি জোড় চেষ্টা করবো।
0 coment rios: